ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি কাগজপত্র লাগবে

ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি কাগজপত্র লাগবে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন আজকের পোস্টে। আমাদের মধ্যে অনেকেরই নতুন অবস্থায় ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকে না। অন্যদিকে বাইক কিংবা যে কোন ধরনের যানবাহন চালানোর ক্ষেত্রে ড্রাইভিং লাইসেন্স আবশ্যক। 

ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া মোটরযান চালানো ট্রাফিক আইন অমান্য করে। যার কারণে আপনার জেল অথবা অর্থদণ্ড কিংবা কোন কোন ক্ষেত্রে উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারে। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত মটরযান চালানোর পূর্বে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিশ্চিত করা। 

আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করব ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি কাগজপত্র লাগবে। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে কি কি কাগজপত্র লাগবে এবং অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে কি কি কাগজপত্র লাগবে। তাই সম্পূর্ণ পোস্টটি ধৈর্য সহকারে পড়ার অনুরোধ রইল।

ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন

ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন

বর্তমান সময়ে স্বশরীরে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করার নিয়ম নেই। তাই এক্ষেত্রে আপনাকে ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য অনলাইনে আবেদন দাখিল করতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি কাগজপত্র লাগবে তা নিম্নে তুলে ধরা হলো: 

  • লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি 
  • শিক্ষাগত সনদের ফটোকপি 
  • ইউটিলিটি বিলের ফটোকপি
  • মেডিকেল সার্টিফিকেট
  • ডোপ টেস্ট (পেশাদার) 
  • পূর্বের ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটোকপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
  • পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট (পেশাদার)
  • বিআরটিএ পেমেন্ট রশিদ

লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স: অনলাইনে আবেদন করার পর আপনাকে একটি লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে। সেটি আপনার ডিভাইসে পিডিএফ আকারে সংরক্ষণ করুন। তারপর যে কোন কম্পিউটার দোকান থেকে সেটিকে প্রিন্ট করে সংরক্ষণ করুন। 

আরো পড়ুনঃ ১ দিনের ভিতরে নতুন ভোটার হোন- ২০২৪

পাসপোর্ট সাইজের ছবি: ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন করতে আপনার দ্বিতীয় যে জিনিসটি প্রয়োজন হবে সেটি হলো: 300*300 pixel এবং 150kb মধ্যে সদ্য তোলা এক কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি। 

শিক্ষাগত সনদের ফটোকপি: শিক্ষাগত সনদের ফটোকপি ক্ষেত্রে আপনাকে সর্বশেষ শিক্ষাগত সনদের ফটোকপি দিতে হবে। অর্থাৎ আপনি যদি অনার্স কিংবা মাস্টার পাশ করে থাকেন। তাহলে এক্ষেত্রে আপনার অনার্স অথবা মাস্টার এর সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে। তবে আপনার যদি কোন ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকে। তাহলে আপনি ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। কারণ ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য সর্বনিম্ন অষ্টম শ্রেণী পাস সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে। 

ইউটিলিটি বিলের ফটোকপি: সাধারণত, বর্তমান ঠিকানা প্রমাণের জন্য ইউটিলিটি বিলের ফটোকপি প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে আপনি পানি, বিদ্যুৎ, টেলিফোন কিংবা গ্যাস যে কোন একটি দেখাতে পারেন। কিন্তু বিলগুলো যদি আপনার নামে না হয়ে, আপনার বাবা বা মায়ের নামে হয়। অথবা আপনি যদি একজন ভাড়াটিয়া হয়ে থাকেন। 

তাহলে আপনি যে কারো একটি বিল দেখাতে পারেন। এতে কোন ধরনের সমস্যা হবে না। ইউটিলিটি বিল শুধুমাত্র বর্তমান ঠিকানা প্রমাণের ক্ষেত্রেই ব্যবহার হয়। 

মেডিকেল সার্টিফিকেট: ড্রাইভিং লাইসেন্স করার ক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট হলো রেজিস্টার ডাক্তার কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট। সাধারণত, যে কোন এমবিবিএস অথবা রেজিস্টার ডাক্তারকে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য সার্টিফিকেট প্রয়োজন জানালে‌। তারা আপনার গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলো করে আপনাকে একটি ফরম দেবে। 

অথবা আপনি চাইলে অনলাইন থেকে ফরমটি ডাউনলোড করে ডাক্তারকে দিয়ে সেটি পূরণ করিয়ে নিতে পারবেন। ফরমটি অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন এবং কাগজপত্র জমা দেওয়া উভয় ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে। 

তাই মেডিকেল সার্টিফিকেট পাওয়ার পর সেটি স্ক্যান করে আপনার কম্পিউটার অথবা মোবাইলে সংরক্ষণ করুন। অবশ্যই ফাইল সাইজ 600kb এর মধ্যে হতে হবে। সম্ভব হলে মেডিকেল সার্টিফিকেট করানোর সময় আপনার রক্তের গ্রুপ টেস্ট করে রাখবেন। কারণ আবেদনের সময় রক্তের গ্রুপ উল্লেখ করা প্রয়োজন। কিন্তু আপনার যদি আগে থেকে টেস্ট করানো থাকে তাহলে নতুন করে আর টেস্ট করাতে হবে না। 

ডোপ টেস্ট: যারা পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করাবেন। তাদের ক্ষেত্রে উপরোক্ত ডকুমেন্টগুলো ছাড়াও আরো একটি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে সেটা হলো: ডোপ টেস্ট। 

পূর্বের ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটোকপি: যাদের পূর্বে ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে। তারা নতুন করে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্সে নবায়ন করতে।পূর্বে ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটোকপি প্রয়োজন হবে। তবে নতুনদের ক্ষেত্রে পূর্বের ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটোকপি প্রয়োজন হবে না। 

আরো পড়ুনঃ অনলাইনে ‌ই রিটার্ন রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম ২০২৪

পুলিশ ভেরিফিকেশন: যারা পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করবেন। তাদের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন এর সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে। কিন্তু অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন নেই। 

ডোপ টেস্ট কি?

ডোপ টেস্ট কি?

সাধারণত পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স বা বিভিন্ন ধরনের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট করানো হয়। ডোপ টেস্ট বা ড্রাগ টেস্ট হলো। আপনি কোন প্রকার মাদকাসক্তিতে আসক্ত কিনা সেটি নিশ্চিত করা। যাদের ড্রপ টেস্ট পজিটিভ আসবে তাদেরকে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স সার্টিফিকেট দেওয়া হয় না। 

ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে

আপনাদের ভিতরে অনেকে জানতে চান ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে। তাই আপনাদের সুবিধার্থে এ পর্যায়ে আমরা আলোচনা করব ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে। সাধারণত, পাঁচ বছর মেয়াদী মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে ৫১৮ টাকা প্রযোজ্য হবে। আবার পাঁচ বছর মেয়াদী পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি ১৬৮০ টাকা প্রযোজ্য হবে। 

আরো পড়ুনঃ অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম- ২০২৪

এছাড়াও, ১০ বছর মেয়াদী অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে ২৫৪২ টাকা এবং আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে ২,৫০০ টাকা প্রযোজ্য হবে। 

আশা করি, আর্টিকেলটি পড়ে আপনি জানতে পেরেছেন পেশাদার এবং অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি কাগজপত্র লাগবে। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে।

Leave a Comment