অনলাইনে খতিয়ান অনুসন্ধান করার উপায় জানুন ২০২৫

খতিয়ান ভূমির আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নথি। সাধারণত জমি ক্রয়-বিক্রয়, মামলা-মোকদ্দমা ইত্যাদি ক্ষেত্রে খতিয়ান এর প্রয়োজন হয়। একটা সময় ছিলো যখন খতিয়ান অনুসন্ধান করার জন্য ভূমি অফিসে দৌড়াদৌড়ি করতে হতো। অনেক রকম ঝামেলার মধ্যে পড়তে হতো। কিন্তু এখন প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে খতিয়ান অনুসন্ধান করার জন্য আপনাকে আর কোথাও দৌড়াদৌড়ি করতে হবে না। আপনি চাইলে খুব সহজে ঘরে বসে অনলাইনে খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারবেন।

আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করবো কিভাবে আপনি আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি ব্যবহার করে অনলাইনে খতিয়ান অনুসন্ধান করবেন। তাই ধৈর্য সহকারে আজকের পোস্টটি পড়ার অনুরোধ রইলো।

অনলাইনে খতিয়ান অনুসন্ধান করার নিয়ম

অনলাইনে খতিয়ান অনুসন্ধান করার জন্য সর্বপ্রথম আপনার মোবাইলের ডাটা সংযোগ চালু করুন। তারপর আপনার মোবাইল থেকে Google Chrome Browser ওপেন করুন এবং সার্চ অপশনে eporcha.gov.bd লিখে সার্চ করুন। তাহলে আপনার সামনে এমন একটি ইন্টারফেস Open হবে।

 

এখানে আপনি বেশ কয়েকটি অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:

• নির্দেশিকা
• সার্ভে খতিয়ান
• নামজারি খতিয়ান
• মৌজা ম্যাপ এবং
• আবেদনের অবস্থা

এখন আপনি সার্ভে খতিয়ান অথবা নামজারি খতিয়ান অপশন ব্যবহার করে অনলাইনে খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারবেন। তাহলে আপনি আপনার প্রয়োজন অনুসারে অপশন সিলেক্ট করুন। উদাহরণ স্বরূপ, আপনি ‘সার্ভে খতিয়ান’ ব্যবহার করে অনলাইনে খতিয়ান অনুসন্ধান করতে চাচ্ছেন।

তাহলে সার্ভে খতিয়ান অপশনে ক্লিক করুন। এখন নিচে আপনি অনেকগুলো অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:

• বিভাগ
• জেলা
• উপজেলা
• খতিয়ানের ধরন
• মৌজা এবং
• খতিয়ানের তালিকা

এখন আপনার বিভাগ, জেলা এবং উপজেলা সিলেক্ট করুন। তারপর আপনার খতিয়ানের ধরন এবং মৌজা লিখুন। এখন খতিয়ানের তালিকা অপশনে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন। সেখানে খতিয়ানের নম্বর এবং মালিকের নাম দেখাচ্ছে। একভাবে আপনি যদি বি এস, সি এস, আর এস ‘খতিয়ান ধরণ’ সিলেক্ট করেন। তাহলে খতিয়ানের তালিকা অপশনে একইভাবে খতিয়ান নম্বর ও মালিকের নাম দেখতে পাবেন।

 

এখন আপনি যদি খতিয়ান নিতে চান। তাহলে ‘খতিয়ান আবেদন’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে এবং একটি ফরম ওপেন হবে। এখন ফরমটিতে লক্ষ্য করলে অনেকগুলো অপশন পাবেন। যেমন:

• উপজেলা সার্কেল
• মৌজা
• খতিয়ান নং
• জাতীয় পরিচয় পত্র নং
• জন্ম তারিখ এবং
• মোবাইল নম্বর

এখানে আপনি যেকোনো ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর এবং জন্ম তারিখ ব্যবহার করে খতিয়ান নম্বর চেক করতে পারবেন। তাহলে আপনি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বরটি বসিয়ে দিন। তারপর আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা জন্ম তারিখ লিখুন এবং আপনার সচল একটি মোবাইল নম্বর বসিয়ে দিন।

তাহলে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র সকল তথ্য চলে আসবে। এখন আপনি নিচে ‘আবেদনে ধরন’
নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন এবং তার নিচে দুটি অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:

• অনলাইন কপি এবং
• সার্টিফাইড কপি

 

এখন আপনি চাইলেই অনলাইন কপি অথবা সার্টিফাইড কপি নিতে পারেন। এখানে আপনি যদি অনলাইন কপি নিতে চান। তাহলে আপনি ইনস্ট্যান্ট নিতে পারবেন। আর আপনি যদি সার্টিফাইড কপি নিতে চান। তাহলে আপনাকে ৭ দিন অপেক্ষা করতে হবে।

এখন আপনি যদি সার্টিফিকেট কপি অপশন এ ক্লিক করেন। তাহলে আপনাকে পরবর্তীভাবে নিয়ে যাবে এবং সেখানে সার্টিফিকেট কফি নিতে কতদিন সময় লাগবে এবং কত টাকা খরচ হবে সেটি দেখতে পাবেন। যেমন:

• প্রদানের সময়সীমা
• সম্ভাব্য প্রদানের তারিখ
• খতিয়ান ফি এবং
• পোস্ট ফি

এখন আপনি চাইলে সার্টিফাইড কপিটি দেশে কিংবা দেশের বাইরে থেকেও ডাকযোগের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে পারবেন। তাহলে আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী অপশন সিলেক্ট করুন। উদাহরণ স্বরূপ, আপনি অনলাইন কপি নিতে চাচ্ছেন। তাহলে ‘অনলাইন কপি’ অপশনে ক্লিক করুন। এখন অনলাইন কপি নিতে আপনার কত টাকা খরচ হবে সেটি দেখতে পাবেন। যেমন:

• প্রদানের সময়সীমা: তাৎক্ষণিক এবং
• খতিয়ান ফি: ১০০ টাকা

সাধারণত, অনলাইন কপি নিতে গেলে আপনাকে ১০০ টাকা পেমেন্ট করতে হবে। এখন নিচে আপনি অনেকগুলো পেমেন্ট মেথড দেখতে পাবেন। যেমন:

• বিকাশ
• রকেট
• নগদ এবং
• উপায় ইত্যাদি

এখন উপরে উল্লেখিত যেকোনো একটি পেমেন্ট মেথড ব্যবহার করে আপনি পেমেন্ট করতে পারবেন। তাহলে আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী পেমেন্ট মেথড সিলেক্ট করুন উদাহরণ স্বরূপ, উপায় পেমেন্ট মেথড ব্যবহার করে পেমেন্ট করার জন্য ‘উপায়’ অপশনে ক্লিক করুন।

তারপর নিচের ক্যাপচাটি সঠিকভাবে পূরণ করে ‘পরবর্তী ধাপ ফি পরিশোধ’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী অপশনে নিয়ে যাবে সেখানে আপনার উপায় একাউন্টের নম্বরটি বসিয়ে দিন এবং Confirm অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার মোবাইল নম্বরে একটি ভেরিফিকেশন কোড যাবে।

এখন সেই কোডটি বসিয়ে Confirm অপশনে ক্লিক করুন। তারপর আপনার উপায় একাউন্টে পিন নম্বর বসিয়ে আবার Confirm অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার পেমেন্টটি সম্পূর্ণ হবে এবং আপনার সামনে খতিয়ান নং ইন্টারফেস ওপেন হবে।

 

এখানে আপনার খতিয়ানের সকল তথ্য দেখতে পাবেন। যেমন:

• মালিকের নাম
• অংশ
• দাগ নম্বর
• জমির শ্রেণী
• দাগের মোট পরিমাণ ইত্যাদি

এখন আপনি যদি খতিয়ানের অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে চান। তাহলে উপর থেকে ডাউনলোড আইকনে ক্লিক করে Save অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার খতিয়ান কপিটি আপনার মোবাইলে ডাউনলোড হয়ে যাবে। তারপর আপনি খতিয়ান কপিটি যে কোন কম্পিউটার দোকান থেকে প্রিন্ট করে ব্যবহার করতে পারবেন।

প্রশ্ন ও উত্তর

আশা করি, আর্টিকেলটি পড়ে বুঝতে পেরেছেন কিভাবে অনলাইনে খতিয়ান অনুসন্ধান করবেন। আপনাদের সুবিধার জন্য নিচে একটি ভিডিও অ্যাড করে দেওয়া হলো। এরকম আরো ভূমি ও আইন বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ কনটেন্ট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে।