অনলাইনে জমির নামজারি আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন আজকের পোস্টে। সাধারণত, বৈধ ভাবে কোনো জমি ক্রয় করার পরে সেই জমির মালিকানা পরিবর্তন করার জন্য মিউটেশন করতে হয়। আর এখন থেকে আপনি চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি ব্যবহার করে খুব সহজেই মিউটেশন করতে পারবেন।
আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করবো। কিভাবে আপনি আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি ব্যবহার করে অনলাইনে জমির নামজারি আবেদন করবেন। অনলাইনে জমির নামজারি আবেদন করতে কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে এবং কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে পেমেন্ট করবেন ইত্যাদি।
অনলাইনে জমির নামজারি আবেদন
অনলাইনে জমির নামজারি আবেদন করার জন্য আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোন অথবা কম্পিউটারের ডাটা সংযোগ চালু করুন। তারপর আপনার মোবাইল কিংবা কম্পিউটারে থাকা Google Chrome Browser ওপেন করুন এবং সার্চ অপশনে land.gov.bd লিখে সার্চ করুন।
তাহলে আপনাকে সরাসরি ভূমি মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নিয়ে যাবে এবং সেখানে এমন একটি ইন্টারফেস ওপেন হবে।
এখন আপনি যদি ওয়েবসাইটে লক্ষ্য করেন। তাহলে দেখতে পাবেন আগে ওয়েবসাইট থেকে এখনকার ওয়েবসাইট পুরোটাই পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন ওয়েবসাইটে আসার পরে আপনাকে একটি একাউন্ট তৈরি করতে হবে। অন্যথায়, আপনি এই ওয়েবসাইট থেকে কোন সেবা গ্রহণ করতে পারবেন না। তাই এই ওয়েবসাইট থেকে সেবা গ্রহণ করার জন্য একাউন্ট তৈরি করা বাধ্যতামূলক।
অনলাইনে জমির নামজারি আবেদন করতে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করুন
এখন অ্যাকাউন্ট তৈরি করার জন্য উপর থেকে ‘লগইন’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে নিচে তিনটি অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- লগইন
- রেজিস্ট্রেশন এবং
- প্রশাসনিক
এখন অ্যাকাউন্ট তৈরি করার জন্য রেজিস্ট্রেশন অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে এবং সেখানেও তিনটি অপশন পাবেন। যেমন: রেজিস্ট্রেশন, নাগরিক/ সংস্থা এবং প্রশাসনিক। এখন আপনি নাগরিক/ সংস্থা অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে পরবর্তী অপশনে একাউন্ট তৈরি করার জন্য আপনার সামনে একটি ফর্ম ওপেন হবে।
এখন আপনাকে একাউন্ট তৈরি করার জন্য ফর্মটি সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে। এখানে আপনি দুইভাবে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন। যেমন:
- মোবাইল নম্বর এবং
- ইমেইল
তাহলে আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী অ্যাকাউন্ট তৈরি করার অপশন সিলেক্ট করুন। উদাহরণস্বরূপ, মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে একাউন্ট তৈরি করার জন্য মোবাইল অপশন ক্লিক করুন। তারপর নিচে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী নাম লিখুন। তারপর আপনার মোবাইল নম্বরটি বসিয়ে দিন এবং ক্যাপচাটি সঠিকভাবে পূরণ করে সাবমিট অপশনে ক্লিক করুন।
তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে এবং আপনার মোবাইল নম্বরে একটি ভেরিফিকেশন কোড যাবে। এখন সেই কোডটি এখানে বসিয়ে দিন এবং ‘সাবমিট করুন’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী অপশনে নিয়ে যাবে এবং সেখানে পাসওয়ার্ড সেট করার অপশন পেয়ে যাবেন।
আরো পড়ুনঃ দাগ নাম্বার দিয়ে জমির মালিকের নাম বা মালিকানা যাচাই
এখন পাসওয়ার্ড এবং পাসওয়ার্ড (পুনরায়) অপশন আপনার পছন্দ মতো একই পাসওয়ার্ড লিখুন এবং নিচে থেকে ‘পাসওয়ার্ড হালনাগাদ করুন’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার অ্যাকাউন্ট তৈরি করা সম্পন্ন হবে। (এখানে অবশ্যই আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী অ্যাকাউন্টটি ১০০% ভেরিফাই করতে হবে)।
অন্যথায়, আপনি জমির নামজারি ওয়েবসাইটে থেকে সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন না। যখনি আপনার একাউন্ট ১০০% ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হবে। তখন আপনার সামনে নতুন একটি ইন্টারফেস ওপেন হবে এবং উপরে লক্ষ্য করলে ‘প্রোফাইলের অগ্রগতি ১০০% লেখা’ দেখতে পাবেন।
অনলাইনে জমির নামজারি আবেদন করার প্রক্রিয়া
অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করার পর এ পর্যায়ে আপনাকে অনলাইনে জমির নামজারি আবেদন করতে হবে। অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করার পর আপনি সেখানে চারটি অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- মিউটেশন
- ভূমি উন্নয়ন কর
- বমি রেকর্ড ও ম্যাপ এবং
- ভূমি অধিগ্রহণ
এখন অনলাইনে জমির নামজারি আবেদন করার জন্য উপরে উল্লেখিত অপশন থেকে ‘মিউটেশন’ অপশন ক্লিক করুন। এখন পরবর্তী অপশনে আপনার সামনে নতুন একটি পেইজ ওপেন হবে এবং সেখানে দুটি অপশন পাবেন। যেমন:
- নতুন আবেদন করতে ক্লিক করুন এবং
- আবেদনের অবস্থা দেখুন।
এখন আপনি ‘নতুন আবেদন করতে ক্লিক করুন’ অপশন ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী অপশনে নিয়ে যাবে সেখান থেকে ‘নতুন আবেদন করুন’ অপশনে ক্লিক করুন।
অনলাইনে জমির নামজারি আবেদন কোর্ট ফি পরিশোধ
এখন পরবর্তী অপশনে মিউটেশন ফরম পূরণ করার পূর্বে ২০ টাকা কোড ফি পরিশোধ করতে হবে। এমন একটি লেখা দেখতে পাবেন এবং তার নিচে আরোও দুটি অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- ইতিমধ্যে কোর্ট ফি ২০ টাকা পরিশোধিত এবং
- কোর্ট ফি ২০ টাকা পরিশোধ করতে হবে
এখন আপনি ‘কোর্ট ফি ২০ টাকা পরিশোধ করতে হবে’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে নিচে আপনার নাম, জন্ম তারিখ এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর চলে আসবে। যেহেতু, আপনার একাউন্টটি আগে থেকে ভেরিফিকেশন করা। তাই আপনার নাম, জন্ম তারিখ এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর চলে আসবে।
এখন নিচে আপনি যে উপজেলায় নামজারি আবেদন করতে চাচ্ছেন। সেই উপজেলার নাম সিলেক্ট করুন। যেমন:
- বিভাগ
- জেলা এবং
- উপজেলা/ সার্কেল
তাহলে আপনি যে উপজেলায় আপনার নামজারি আবেদন করতে চাচ্ছেন। সেই উপজেলা অনুযায়ী উপরে উল্লেখিত অপশন গুলো সঠিকভাবে পূরণ করুন। তারপরে নিচে দেখতে পাবেন আপনার মোবাইল নম্বর এবং আপনার ঠিকানা চলে আসবে।
এখন সকল অপশন সঠিকভাবে বসানো হয়ে গেলে নিচে থেকে পরবর্তী লেখাতে ক্লিক করুন। তাহলে পরবর্তী অপশনে আপনার সামনে পেমেন্ট করার অপশন চলে আসবে।
এখন আপনাকে অনলাইন এর মাধ্যমে ২০ টাকা পেমেন্ট করতে হবে। তাহলে পেমেন্ট করার জন্য ইন্টারনেট ব্যাংকিং সিলেক্ট করে নিচে থেকে ‘অগ্রসর হউন’ অপশন ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী অপশনে নিয়ে যাবে এবং সেখানে অনলাইনের মাধ্যমে পেমেন্ট করার জন্য তিনটি পেমেন্ট মেথড দেখতে পাবেন। যেমন:
- উপায়
- নগদ এবং
- বিকাশ
তাহলে আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী যেকোন একটি পেমেন্ট মেথড সিলেক্ট করুন। উদাহরণ স্বরূপ, বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট করার জন্য ‘বিকাশ’ অপশনে ক্লিক করে ‘পেমেন্ট’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে পরবর্তী অপশনে বিকাশের পেমেন্ট মেথড ওপেন হবে। এখন আপনি আপনার বিকাশ নম্বরটি বসিয়ে দিন এবং Confirm লেখাটিতে ক্লিক করুন।
তাহলে আপনার মোবাইল নম্বরে OTP কোড অথবা ভেরিফিকেশন কোড যাবে। সেই কোডটি বসিয়ে Confirm লেখাটিতে ক্লিক করুন। তারপর আপনার বিকাশ একাউন্টের PIN নম্বরটি বসিয়ে আবারোও Confirm লেখাটিতে ক্লিক করুন। তাহলে অনলাইনের মাধ্যমে আপনার পেমেন্টটি সম্পন্ন হবে।
অনলাইনে জমির নামজারি আবেদন প্রক্রিয়া ধাপ: দুই
অনলাইনে জমির নামজারি আবেদন পেমেন্ট সম্পন্ন করার পর আপনার সামনে এমন একটি সতর্কতা বার্তা চলে আসবে।
এখানে অবশ্যই আবেদনের ৭ দিনের মধ্যেই আপনার আবেদন জমা করতে হবে। এখন আপনি যদি ৭ দিনের মধ্যেই আপনার আবেদনটি জমা না করেন। তাহলে ৭ দিন পর আপনার আবেদনটি অটোমেটিক বাতিল হয়ে যাবে এবং পুনরায় কোর্ট ফি ২০ টাকা পরিশোধ বাবদ আবেদন করতে হবে।
এখন পেমেন্ট সম্পন্ন হওয়ার পর সতর্ক বার্তা আসলে ‘ঠিক আছে’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আবেদনের একটি ট্র্যাকিং নম্বর দেখতে পাবেন। এখন আপনাকে যে কাজটি করতে হবে সেটি হলো: এখান থেকে ট্র্যাকিং নম্বরটি কপি করে নিচে থেকে ‘আবেদন ফরম’ লেখাটিতে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে এবং সেখানে এমন একটি পেইজ ওপেন হবে।
এখন আপনি ‘যে সূত্রে মিউটেশন আবেদন করবেন সেটি নির্বাচন করুন’ অপশন দেখতে পাবেন এবং তার নিচে দুটি অপশন পাবেন। যেমন:
- সরাসরি রেকর্ডীয় মালিকের খতিয়ান হতে এবং
- মিউটেশন খতিয়ান হতে
তাহলে আপনি আপনার প্রয়োজন অনুসারে অপশন সিলেক্ট করুন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি সরাসরি রেকর্ডীয় মালিকের খতিয়ান হতে অপশন সিলেক্ট করলেন। তাহলে নিচে কিভাবে ‘মালিকানা অর্জন করেছে’ অপশন দেখতে পাবেন এবং তার নিচে অনেকগুলো অপশন পাবেন। যেমন:
- ক্রয়
- উত্তরাধিকারী
- সেবা
- বন্দোবস্তু এবং
- ডিক্রি
তাহলে আপনি কিভাবে মালিকানা অর্জন করেছেন সেটি সিলেক্ট করুন। তারপর নিচে থেকে সংরক্ষণ এবং পরবর্তী লেখাটিতে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী অপশনে নিয়ে যাবে এবং সেখানে এমন একটি ইন্টারফেস ওপেন হবে।
এখন প্রথমেই আপনি কি প্রতিনিধির মাধ্যমে আবেদন করছেন অপশন দেখতে পাবেন। এখন আপনি যদি কোন প্রতিনিধির মাধ্যমে আবেদন করেন। তাহলে হ্যাঁ অপশনে ক্লিক করুন। অন্যথায় না অপশনে ক্লিক করুন। তারপর নিচে আবেদনকারী/গ্রহীতা তথ্য অপশন দেখতে পাবেন।
আরো পড়ুনঃ অনলাইনে খতিয়ান অনুসন্ধান করার উপায়
অর্থাৎ, আপনি কি একক নামে মিউটেশন করতে চান অথবা যৌথ নামে মিউটেশন করতে চান। তাহলে আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী অপশন সিলেক্ট করুন। যেমন: একক অথবা যৌথ। এখন আপনি যদি একক অপশন সিলেক্ট করেন। তাহলে নিচে দেখতে পাবেন একটি টেবিল শো করবে। এখন আপনি সেখান থেকে ‘তথ্য দিন’ অপশনে ক্লিক করুন।
তাহলে আপনাকে পরবর্তী অপশনে নিয়ে যাবে এবং সেখানে ‘আবেদনকারী/গ্রহীতা’ অপশন দেখতে পাবেন এবং তার নিচে বেশ কয়েকটি অপশন থাকবে। যেমন:
- প্রাপ্তবয়স্ক
- অপ্রাপ্ত বয়স্ক
- প্রবাসী এবং
- বীর মুক্তিযোদ্ধা
তাহলে আপনি আপনার গ্রহীতা সিলেক্ট করুন। তারপর আপনার অথবা আবেদনকারীর একটি ছবি আপলোড করতে হবে। (ছবির সাইজ ৩০০*৩০০ পিক্সেল)। তাহলে আপনি আপনার একটি স্পষ্ট ছবি আপলোড করুন। এখন ছবি আপলোড করা হয়ে গেলে নিচে আপনার ডিটেলস চলে আসবে। যেমন: নাম, ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বর ইত্যাদি।
এখানে আপনাকে যে কাজটি করতে হবে সেটি হলো: এখানে যে ঘর গুলো ফাঁকা রয়েছে। সেই ঘরগুলো আপনাকে সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে। যেমন:
- বিভাগ
- জেলা
- উপজেলা অথবা সার্কেল এবং
- ঠিকানা
তাহলে উপরে উল্লেখিত অপশন গুলো আপনি সঠিকভাবে পূরণ করুন। এখন সকল অপশন সঠিকভাবে পূরণ করা হয়ে গেলে নিচে থেকে সংরক্ষণ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে পরবর্তী অপশনে আবেদনকারী অথবা গ্রহীতার নাম, ফোন নম্বর, জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর এবং জমির অংশ রং
যুক্ত হয়ে যাবে।
এখন নিচে গেলে দেখতে পাবেন যে, দলিলের ভিত্তিতে আপনি মিউটেশন আবেদন করছেন। সেই জায়গায় আপনার দলিল নম্বর যুক্ত, দলিলে তারিখ, দলিলের মূল্য এবং দলিলের কয়টি পৃষ্ঠা রয়েছে সেটি যুক্ত করতে হবে। তারপর নিচে জেলা এবং সাব রেজিস্টার অফিসের নাম দেখতে পাবেন।
এখন আপনার জেলা এবং সাব রেজিস্ট্রার অফিসের নাম সিলেক্ট করুন। এখন আপনি ‘সংযুক্ত করুন’ নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন। সেখানে ক্লিক করে আপনার দলিলের স্ক্যান কপিটি সংযুক্ত করুন। এখানে অবশ্যই আপনার দলিলের কপির সাইজ সর্বোচ্চ1.25 MB হতে হবে।
এখন নিচে আপনি ‘দলিল অনুযায়ী আবেদনকৃত জমির তফসিল’ নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন এবং তার নিচে অনেকগুলো অপশন রয়েছে। যেমন:
- বিভাগ
- জেলা
- উপজেলা/ সার্কেল এবং
- মৌজা নির্বাচন
তাহলে উপরে উল্লেখিত অপশনে আপনার বিভাগ এবং জেলা নির্বাচন করুন। তারপর আপনার উপজেলা/ সার্কেল এবং মৌজা নির্বাচন নির্বাচন করুন। এখন উপরে উল্লেখিত সকল অপশন সঠিকভাবে পূরণ করা হয়ে গেলে নিচে থেকে ‘জমির তথ্য যুক্ত করুন’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে এবং সেখানে প্রথমেই দলিল নম্বর (সাব রেজিস্টার অফিস) চলে আসবে।
তাহলে আপনি আপনার দলিল নম্বর (সাব রেজিস্টার অফিস) সিলেক্ট করুন। তারপর আপনার জমির দলিলের হোল্ডিং নম্বরটি লিখুন। এখন হোল্ডিং নম্বর বসানো হয়ে গেলে নিচে থেকে জরিপের নাম সিলেক্ট করুন। এখানে অবশ্যই স্টার দেওয়া অপশন গুলো আপনাকে পূরণ করতে হবে। অন্যথায়, আপনার আবেদনটি অগ্রসর করতে পারবেন না।
তারপর নিচে আপনার জমির খতিয়ান নম্বরটি সিলেক্ট করুন এবং ‘যাচাই করুন’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে নিচে আপনার দাগের তথ্য অপশন চলে আসবে।
এখন আপনি ‘দাগের তথ্য’ অপশনের নিচে বেশ কয়েকটি অপশন পাবেন। যেমন:
- দাগ নম্বর
- আবেদনের প্রার্থীর শ্রেণী
- ব্যবহারের ধরন
- জমির পরিমাপ এবং
- আবেদনের বর্ণিত তফসিল
তাহলে উপরে উল্লেখিত অপশন গুলো আপনি সঠিকভাবে পূরণ করুন। তারপরে নিচে ‘আবেদনকৃত তফসিলটি……. প্রকল্প এলাকায় কি না?’ সেটি সিলেক্ট করুন। এখন সকল অপশন সঠিক হবে পূরণ করা হয়ে গেলে ‘সংরক্ষণ’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে এবং সেখানে দলিল অনুযায়ী আবেদনকৃত জমির তফসিল চলে আসবে।
এখানে যদি আপনি আরোও তথ্য যুক্ত করতে চান। তাহলে ‘আরো জমির তথ্য যুক্ত করুন’ অপশনে ক্লিক করে যুক্ত করতে পারবেন। এখন নিচে ‘প্রদানকারী/দাতার তথ্য প্রদান করুন’ অপশন দেখতে পাবেন। অর্থাৎ, আপনি যে ব্যক্তির কাছ থেকে জমিটি ক্রয় করেছেন। এখানে সেই ব্যক্তি আপলোড করতে হবে।
এখন তথ্য সংযুক্ত করার জন্য ‘দাতা সংযুক্ত করুন’ অপশনে ক্লিক করুন। এখন পরবর্তী ধাপে আপনি অনেকগুলো অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- মালিক নির্বাচন করুন (জীবিত/মৃত)
- দাতার নাম
- মোবাইল নম্বর
- জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর
- জন্ম তারিখ
- পিতার নাম
- মাতার নাম
- বিভাগ
- জেলা
- উপজেলা/ সার্কেল এবং
- ঠিকানা
এখন প্রথমেই আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে জমির মালিক জীবিত নাকি মৃত। তারপর দাতার নাম সিলেক্ট করুন। যেহেতু, এখানে আপনি খতিয়ান যুক্ত করেছেন। সেজন্য অটোমেটিক দাতার নাম সিলেক্ট করা থাকবে। তারপর দাতার মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর এবং জন্ম তারিখ লিখুন।
এখন সকল অপশন সঠিকভাবে পূরণ করা হয়ে গেলে দাতার পিতার নাম, মাতার নাম, বিভাগ, জেলা, উপজেলা/ সার্কেল এবং ঠিকানা নির্বাচন করুন। তারপর স্ক্রোল করে নিচে নামলে ‘অংশ অনুযায়ী জমির পরিমাণ’ নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন।
তাহলে দাতার জমির অংশ পরিমাণ সিলেক্ট করুন। এখন সকল অপশন আবারো ভালভাবে চেক করুন এবং নিচে থেকে ‘সংরক্ষণ’ অপশন এ ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী অপশনে নিয়ে যাবে এবং সেখানে দেখতে পাবেন দাতার তথ্য যুক্ত হয়ে যাবে।
এখন নিচে থেকে ‘দাতা এবং সর্বশেষ জরিপ/ মিউটেশনের রেকর্ড এর মালিক একই?’ কিনা সেটি সিলেক্ট করুন। তারপর নিচে ‘প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যুক্ত করুন’ অপশন দেখতে পাবেন। এখানে আপনার জমির কলমি নকশা, প্যান্টাগ্ৰাফ থাকলে যুক্ত করবেন এবং সাথে অন্য অন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো যুক্ত করুন।
এখন সকল ডকুমেন্ট সংযুক্ত করা হয়ে গেলে নিচে থেকে সংরক্ষণ এবং পরবর্তী লেখাটিতে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী অপশনে নিয়ে যাবে এবং সেখানে আবেদন সংক্রান্ত ঘোষণা নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন। এখন আপনি ‘আবেদন সংক্রান্ত ঘটনা’ অপশনের নিচে অনেকগুলো অপশন পাবেন। যেমন:
- গ্রহীতা মালিকানা…. হিস্যা সঠিক আছে কিনা?
- আবেদনকৃত জমির….. আছে কিনা?
- আবেদনকৃত জমিতে….. আদালতের নিষেধাজ্ঞা আছে কিনা?
- আবেদনকৃত….. স্বার্থ আছে কিনা?
- আবেদনকৃত জমির……. ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ আছে কিনা?
- গ্রহীতাদের এই মৌজার……আছে কিনা? এবং
- আবেদনকৃত…… বিবেচ্য কার নামে রেকর্ড ভূক্ত
তাহলে উপরে উল্লেখিত অপশন গুলো আপনি সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করুন। তারপর নিচের ‘আমার কৃষি জমে হিসেবে ৬০ বিঘার উপরে জমি নাই…..’ অপশন টিক চিহ্ন দিয়ে ‘খসড়া দেখুন/ প্রিন্ট’ অপশনে ক্লিক করুন। তারপর আপনি পুনরায় চেক করে দেখুন সকল অপশন সঠিক রয়েছে কিনা।
এখন সকল অপশন সঠিকভাবে থাকলে আপনি চাইলে এখান থেকে খসড়া সংরক্ষণ করতে পারবেন অথবা আপনি সরাসরি আবেদন দাখিল করতে পারবেন। এখন সরাসরি আবেদন দাখিল করার জন্য ‘আবেদন দাখিল করুন’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী অপশনে নিয়ে যাবে এবং সেখানে বিশেষ সতর্কতা দেখতে পাবেন।
এখন আপনি সেখানে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন। আপনি পেমেন্ট সম্পন্ন করার পরে তথ্য সংশোধন করার কোন সুযোগ পাবেন না। তাই অনুগ্রহ করে নিমোক্ত বিষয় দুটি নিশ্চিত করুন। এখন আবেদনের ফরম সঠিক রয়েছে কিনা সেটি চেক করার জন্য ‘আবেদনের ফরম সঠিক রয়েছে কিনা’ অপশনের পাশে থেকে ‘পুরনকৃত ফরমটি দেখতে ক্লিক করুন’ অপশনে ক্লিক করে আপনি চেক করুন আপনার ফরমটি সঠিক রয়েছে কিনা।
তারপরে নিচে ‘আবেদনের সাথে যুক্ত সকল ডকুমেন্ট……. সঠিকভাবে প্রদান করা হয়েছে’ অপশন দেখতে পাবেন। এখন আপনি ‘আবেদনের সাথে যুক্ত সকল ডকুমেন্ট……. সঠিকভাবে প্রদান করা হয়েছে’ অপশনের পাশে থেকে ‘সংযুক্তি সমূহ দেখতে ক্লিক করুন’ অপশনে ক্লিক করে সংযুক্তি গুলো দেখতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ অনলাইনে বাসা ভাড়া খোঁজার উপায় ২০২৫
এখন সকল অপশন সঠিকভাবে থাকলে নিচে থেকে ‘আবেদনের ফরমের তথ্য সঠিক এবং সংযুক্ত সকল………আমি পেমেন্ট করতে চাই’ অপশনে টিক চিহ্ন দিয়ে দিন। তাহলে নিচে আপনার আবেদনের ট্র্যাকিং নম্বর এবং নোটিশ জারি ফি চলে আসবে।
এখন আপনাকে অনলাইনের মাধ্যমে নোটিশ জারি ফি ৫০ টাকা পেমেন্ট করতে হবে। পেমেন্ট করার পদ্ধতি নিম্নে তুলে ধরা হলো
অনলাইনে জমির নামজারি আবেদনের নোটিশ জারি ফি পরিশোধ
তাহলে অনলাইনের মাধ্যমে পেমেন্ট করার জন্য ইন্টারনেট ব্যাংকিং অপশনে ক্লিক করে ‘অগ্রসর হউন’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে এবং সেখানে পেমেন্ট করার জন্য তিনটি পেমেন্ট মেথর দেখতে পাবেন। যেমন:
- নগদ
- রকেট এবং
- বিকাশ
এখন আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী পেমেন্ট মেথর সিলেক্ট করুন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে চাচ্ছেন। তাহলে বিকাশ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে বিকাশের পেমেন্ট মেথড ওপেন হবে। এখন আপনি আপনার বিকাশ নম্বরটি লিখুন এবং Confirm লেখাটিতে ক্লিক করুন।
তাহলে আপনার মোবাইল নম্বরে একটি ভেরিফিকেশন কোড অথবা Otp যাবে। এখন সেই ভেরিফিকেশন কোডটি বসিয়ে নিচে থেকে Confirm লেখাটিতে ক্লিক করুন। তারপর আপনার বিকাশ একাউন্টের PIN নম্বরটি বসিয়ে আবারোও Confirm লেখাটিতে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার পেমেন্টি সম্পন্ন হবে এবং আপনার আবেদনটি সাবমিট হয়ে যাবে।
এখন আপনার আবেদনটি সাবমিট হয়ে গেলে যখনই আপনি ৫০ টাকা কোর্ট ফি পরিশোধ করবেন। তখন আপনার আবেদনটি উপজেলা সার্কেল অফিসে আপনার আবেদনটি জমা হয়ে যাবে। এখন উপজেলা সার্কেল অফিস থেকে আপনার আবেদনটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে জমা করা হবে।
তারপর আপনার আবেদনটি পৌর অবলিক ইউনিয়ন ভূমি অফিস হতে আবেদন প্রাপ্তি এবং খতিয়ানের হোল্ডিং নম্বর সমন্বয় প্রাপ্তি হবে। তারপর আপনার আবেদনটির শুনানির তারিখ এবং নোটিশ জারি নিশ্চিত করা হবে। এখন এই শুনানির তারিখ আপনার মোবাইল নাম্বারে এসএমএস এর মাধ্যমে পাঠানো হবে।
এখন যে তারিখে আপনার শুনানি গ্রহণ করা হবে সেই তারিখে আপনি আবেদন করার সময় যে ডকুমেন্টগুলো সাবমিট করেছেন। সেই ডকুমেন্ট গুলোর অরজিনাল কপি এবং ফটোকপি নিয়ে যেতে হবে। এখানে অবশ্যই দাতা এবং গ্রহীতার সকল ডকুমেন্ট নিয়ে আপনাকে শুনানি অফিসে যেতে হবে।
এখন শুনানি গ্রহণের পর আপনারা সকল রকমের যদি সঠিক থাকে। তাহলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত টি আপনার এসএমএস এর মাধ্যমে জানানো হবে। এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যদি সঠিক হয় এবং অনুমোদিত হয়। তাহলে আপনাকে এখানে ১১০০ টাকা ডিসিআর ফ্রি পরিশোধ করতে হবে।
যখনই আপনার আবেদনটি আপলোড হয়ে যাবে। তখন আপনি একাউন্টে লগইন করলে সেটি দেখতে পাবেন। এখন ডিসিআর ফ্রি পরিশোধ করা হয়ে গেলে সিস্টেম জেনারেটর খতিয়ান অথবা ডিসিআর হস্তান্তর বৃষ্টান্ত ডাউনলোড করতে পারবেন। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক মিউটেশন আবেদন করতে কত টাকা প্রয়োজন হবে?
অনলাইনে জমির নামজারি আবেদন করতে কত টাকা প্রয়োজন হবে
অনলাইনে জমির নামজারি আবেদন করতে কত টাকা প্রয়োজন হবে। সেই সম্পর্কে বিস্তারিত নিম্নের তালিকা হিসেবে তুলে ধরা হলো:
- অনলাইনে আবেদনের শুরুতেই আপনাকে ২০ টাকা অনলাইনের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে হবে
- অনলাইনে আবেদন জমা দেওয়ার পূর্বে নোটিশ ফি ৫০ টাকা পেমেন্ট করতে হবে এবং
- মিউটেশন অনুমোদনের পর ১,১০০ টাকা সংশোধন ও খতিয়ান ফি পরিশোধ করতে হবে
আশা করি, আজকের আর্টিকেলটি পড়ে বুঝতে পেরেছেন। কিভাবে আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি ব্যবহার করে অনলাইনে জমির নামজারি আবেদন করবেন।
অনলাইনে জমির নামজারি আবেদন করতে কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে এবং কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে পেমেন্ট করবেন ইত্যাদি সম্পর্কে। এরকম আরোও গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে।